রাজ্জাকের ও তাইজুলে বোলিং তোপে শ্রীংলঙ্কা ২২২ রানে গুটিয়ে গেলো

শ্রীলঙ্কার ইনিংস যখন ২২২ রানে শেষ হয়েছে, আবদুর রাজ্জাক কি নিজেকে চিমটি কেটে দেখছেন? যা হয়েছে, সেটা স্বপ্নে না তো? জাতীয় দলে ফেরার আশা যখন প্রায় দূর দিগন্তে মিলিয়ে যাচ্ছে, তখনই আবার ডাক পেলেন। তাও চার বছর পর। সেই ফেরাটাও তো কী রাজসিকই না হলো! টেস্ট ক্যারিয়ারেই যা কখনো করতে পারেননি, রাজ্জাক আজ প্রথমবারের মতো নিয়েছেন চার উইকেট। তবে এতোটা কোনো বঞ্চনার জবাব বা অন্যকিছু নয়, বরং একটা উদাহরণ হিসেবেই দেখতে চাইছেন এই বাঁহাতি স্পিনার।

চট্টগ্রাম টেস্টে ডাক পাওয়ার পরেই বলেছিলেন, দলে ডাক পাওয়াটা ঠিক বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। ওই টেস্টে আর খেলা হয়নি, সেটা হয়তো তার জন্য শাপেবরই হয়েছে। চট্টগ্রামের মরা পিচ থেকে নিজের পছন্দের স্পিন-ঘূর্ণি পেয়ে গেছেন ঢাকায়। নিজেই তো আজ বলেছেন, কখনো এমন উইকেটে বল করার সুযোগ পাননি বাংলাদেশের হয়ে।

কিন্তু এতোদিন পরে দলে ফেরার অনুভূতিটা ঠিক কেমন? রাজ্জাক ঠিক মুখ ফুটে তা বলতে পারলেন না, ‘প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ের জন্য জাতীয় দলে আসাটা গুরুত্বপূর্ণ ও বড় ব্যাপার। এর অনুভূতি মুখ দিয়ে বলা যায় না। ভিতরে ভিতরে অনুভব করা যায়।’

এতোদিনে ঘরোয়া লিগে উইকেটের পর উইকেট নিয়ে গেছেন, কিন্তু সুযোগ হয়নি। সেটা এতোদিন পরে হওয়ার জন্য চাপা কোনো ক্ষোভ কি আছে? রাজ্জাক তা মানলেন না, ‘না, তা নয়। আমি আসলে জবাব হিসেবে দেখছি না। যখন যেখানে খেলার সুযোগ পেয়েছি, চেষ্টা করেছি ভালো করার। ভালো হলে খুশি হই। খারাপ হলে যে খুব মন খারাপ হয় সেটা না। পারফর্ম্যান্সকে আসলে জবাব হিসেবে বলা ঠিক হবে না।’

সেটা না হোক, এই ফেরাটা তো একটা উদাহরণই। নিজের কাজটা ঠিকঠাক করে গেলে প্রতিফল মিলবেই, রাজ্জাকের ফেরাটা তো সেই আপ্তবাক্যে বিশ্বাসীদের জন্য বড় একটা প্রেরণাই। নিজেও তা স্বীকার করলেন, ‘অবশ্যই আমি এটা মনে করি। এখনকার সময়ে ক্রিকেটের যে অবস্থা, তারপরও আমাকে দলে নেয়া হয়েছে, এর জন্য বোর্ডকে ধন্যবাদ। এটাতেই প্রমাণ হয় কারো সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে না কখনো।’

এতোদিন পর জাতীয় দলে ফেরা, ড্রেসিংরুম ভাগাভাগি করা, সংবাদ সম্মেলনে আসা… বাড়তি একটা রোমাঞ্চ কি কাজ করে না? রাজ্জাক শুরুর দিকের সেই রোমাঞ্চই এগিয়ে রাখছেন, ‘হার্ট বিট করছে! তবে আগের মতো নয়। একটা উত্তেজনা তো সব সময়ই কাজ করে, টিম সিলেকশন থেকে শুরু করে (খেলা পর্যন্ত)। এটা আসলে জীবন ও খেলারই অংশ।’

তারপরও জাতীয় দলে ফেরাটা বাকি সব কিছুর চেয়ে আলাদা করেই রাখলেন, ‘এই জায়গাটা এমনই জায়গা, এখানে আসলে সবাই সিরিয়াস। সবাই যার যার কাজ করে নেয়। আসলে ঘরোয়া পর্যায়ের যে কোনো খেলা, আইপিএল-বিপিএল বা যতো প্রিমিয়ার লিগ আছে সব কিছুর চেয়ে জাতীয় দলকে আমি অনেক উপরে রাখি। কেনো যেনো একটা অন্য রকম অনুভূতি থাকে। প্রত্যেক খেলোয়াড়ের মধ্যে চাপ থাকে।’

রাজ্জাক স্বীকার করলেন, আজও শুরুতে কিছুটা চাপ ছিল। পরে তা কমে গেছে অনেকটাই। দ্বিতীয় ইনিংসে দারুণ কিছু করলে সেই চাপ নিশ্চয়ই আরও কমে যাবে!

No comments

Powered by Blogger.