আইপিএলে যাচ্ছেন কোচ সালাউদ্দীন!

সাকিবের ডাকে আইপিএলে যাচ্ছেন গুরু সালাউদ্দিন। আইপিএল খেলতে গিয়ে এরকম বসেই আছেন সাকিব! ইনজুরি কাটিয়ে মাঠে ফিরলেও সেভাবে প্রস্তুতি নিতে পারছেন না বিশ্বকাপের। তাই প্রিয় কোচ সালাউদ্দিনকেই সাকিবের ফোন- আসতে হবে ভারতে। প্রিয় শিষ্যের ডাকে সাড়া দিয়ে ভারতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

সাকিব তার এই গুরুকে ডেকেছেন একটু আলাদা করে ব্যাটিং এবং বোলিং প্র্যাকটিস করার জন্য। সবকিছু ঠিক থাকলে ১৩ এপ্রিল ভারতে থাকা সাকিবের কাছে যেতে পারেন কোচ সালাউদ্দিন। এবার আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ খেলার পরই টম মুডির রিজার্ভ বেঞ্চে চলে গেছেন তিনি।

এ অবস্থায় শিষ্যের পাশে থাকাকে দায়িত্ব মনে করছেন সালাউদ্দিন, ‘সাকিব চাচ্ছে ভারতে গিয়ে কয়েকটা দিন ওর প্র্যাকটিসে থাকি আমি। সেভাবে একটা প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছি। লীগ শেষ হলে এক-দুই দিনের মধ্যেই যাওয়ার পরিকল্পনা আছে।’

মূলত ইনজুরি থেকে ফেরার পর ব্যাটিং-বোলিং নিয়ে খুব বেশি একটা অনুশীলনের সুযোগ পাননি সাকিব। চিকিৎসকের কাছ থেকে খেলার ছাড়পত্র পেতেই ২০ মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে তাকে।

আইপিএলে খেলতে যাওয়ার আগে ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে একটি ম্যাচ খেলতে চেয়েও পারেননি। বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন রাজি না হওয়ায় ম্যাচ প্র্যাকটিস ছাড়াই যেতে হয়েছে আইপিএলে। এর পরও সানরাইজার্স হায়দরাবাদের অস্ট্রেলিয়ান কোচ টম মুডি শুরুর ম্যাচের একাদশে রেখেছিলেন তাকে।

যদিও সে ম্যাচে ভালো খেলেও হেরেছে সানরাইজার্স। হারের ম্যাচে বোলিংয়ে দৃষ্টি কাড়তে পারেননি সাকিব। তার ছন্দহীনতার সুযোগ লুফে নিয়েছেন বাকিরা। যে কারণে রিজার্ভ বেঞ্চেই সাকিবকে ঠিকানা পাকাপাকি হয়ে গেছে। এতে উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য কোনোটাই পূরণ হচ্ছে না তার। বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতেও ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। সেটা পুষিয়ে নিতেই সালাউদ্দিনকে নিয়ে একান্তে কয়েকটা দিন নেট সেশন করতে চান। এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে বাংলাদেশেরই লাভ। আয়ারল্যান্ডের ত্রিদেশীয় সিরিজেই ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই ছন্দে থাকা সাকিবকে পেতে পারে দল।

বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে একাগ্র থেকে খেলতে পারবেন বিশ্বের অন্যতম এ অলরাউন্ডার। আর সেরা ছন্দে থাকা সাকিবের কাছ থেকে দু’জন ক্রিকেটারের সার্ভিস পাবে জাতীয় দল। বিশ্বকাপ তো সাকিবেরই ধ্যানজ্ঞান। বিশ্বের সর্বোচ্চ এ টুর্নামেন্ট নিয়ে বেশ আগে থেকেই মনস্তাত্ত্বিকভাবে তৈরি হচ্ছেন তিনি। নিজেকে নিয়ে সব ধরনের পরিকল্পনাও করে রেখেছেন। সেজন্যই এ মুহূর্তে গুরু সালাউদ্দিনের শরণাপন্ন হয়েছেন তিনি।

সাকিব বিকেএসপির ছাত্র থাকাকালে সালাউদ্দিনের কাছ থেকে ক্রিকেটের শিক্ষাটা পেয়েছেন। ছাত্রের ভালোমন্দ সবই জানা সালাউদ্দিনের। তারা দু’জন নেটে এক হলে দ্রুতই ছোটখাটো ত্রুটিগুলো কাটিয়ে উঠতে পারবেন সাকিব। তবে সালাউদ্দিনকে পাওয়া না পাওয়া অনেকটাই নির্ভর করছে ঢাকা প্রিমিয়ার লীগের শেষ দুই রাউন্ডে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের পারফরম্যান্সের ওপর।

কারণ সালাউদ্দিন যে গাজী গ্রুপের কোচ। লীগ রাউন্ডে তার দলের আরও দুটি ম্যাচ রয়েছে, দশম রাউন্ডে আজ শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে, আর ১১ এপ্রিল লীগের শেষ ম্যাচ খেলবে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে। এ দুটি ম্যাচ জিতে গেলে সুপার লীগে খেলার টিকিট পেয়ে যাবে গাজী গ্রুপ। তবে কোনো একটি ম্যাচে হারলেই ১১ এপ্রিলই লীগ শেষ হবে দলটির এবারের লীগ মৌসুম। এদিকটাও মাথায় রেখেছেন সালাউদ্দিন, ‘আমার দল সুপার লীগে গেলে সেক্ষেত্রে যাওয়া হবে না।

সেক্ষেত্রে সাকিবও বিষয়টি মেনে নেবে। কারণ সে জানে, লীগে আমাকে থাকতে হবে। আর শেষ পর্যন্ত আমরা সুপার লীগে কোয়ালিফাই না করলে সাকিবের ওখানে যাব।’ সাকিবও জানেন, তাকে অপেক্ষায় থাকতে হবে কোচ সালাউদ্দিনের দলের বাকি দুই ম্যাচের ফলাফল দেখার জন্য। শেষ পর্যন্ত গুরুকে কাছে পেলে সাকিবও মন খুলে নীরবে-নিভৃতে নিজের গুছিয়ে নিতে পারবেন বিশ্বকাপের জন্য।

অবশ্য ২০ বা ২১ এপ্রিল ভারত থেকে দেশে ফিরতে হতে পারে সাকিবকে। বিসিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা চান ২২ এপ্রিল জাতীয় দলের ক্যাম্পেও শুরুর দিনই নির্বাচিত ক্রিকেটাররা প্র্যাকটিসে যোগ দিক। এক সপ্তাহের প্রস্তুতি সেরে একসঙ্গে ঢাকা থেকেই আয়ারল্যান্ডে যাক পুরো দল। বোর্ড ও টিম ম্যানেজমেন্টের এ সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে হয়তো শুরু থেকেই অনুশীলনে যোগ দিতে হবে সাকিবকে। তবে সাকিব আইপিএলে নিয়মিত ম্যাচ খেললে অন্যরকম হলেও হতে পারত।

সুত্রঃ- দৈনিক সমকাল

No comments

Powered by Blogger.