এখনও ‘ম্যানকাড’ আউটের বিরুদ্ধে বাংলােদেশের বোলিং কোচ

‘ম্যানকাড’ আউট-ননস্ট্রাইক প্রান্তে বল ছোঁড়ার সময় ব্যাটসম্যানকে বোকা বানিয়ে স্ট্যাম্প ভেঙে দেয়া। বিতর্কিত এই আউট কখনই ক্রিকেটীয় চেতনার মধ্যে পড়ে না, তবে আইনবিরুদ্ধও নয়। সম্প্রতি আইপিএলে রবিচন্দ্রন অশ্বিন এমন এক কাজ করে আবারও বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন। যা নিয়ে কথা হচ্ছে পুরো ক্রিকেট বিশ্বজুড়ে।

দলের প্রয়োজনে অনেক সময় এমন কিছু করতে হয়। অনেকের মত এমনটা। যেহেতু আইনে বাধা নেই। তবে সবকিছুই কি আইন দিয়ে মাপা যায়? ভদ্রতা, সৌজন্যতা আর খেলোয়াড়ি মনোভাব বলেও তো কথা আছে। ‘ম্যানকাড’ আউট তাই কোনোমতেই সমর্থনযোগ্য নয়, এমনটাই বিশ্বাস করেন বাংলাদেশের বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশ।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি এই পেসার ‘ম্যানকাড’ আউট নিয়ে জোর গলায় কথা বলতেই পারেন। তিনি যে এই খেলাটায় ক্রিকেটীয় চেতনার উজ্জ্বল এক দৃষ্টান্ত। ১৯৮৭ সালে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠার লোভ সামলে ক্রিকেটীয় চেতনা দেখিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন ওয়ালশ। যেটির জন্য এখনও অনুশোচনা বোধ করেন না তিনি।
আধুনিক ক্রিকেট অনেক বদলে গেছে। এখন সবার আগে দল, দলের সাফল্য। এ যুগে খেললে কি ‘ম্যানকাড’ আউটকে সমর্থন করতেন? ওয়ালশ পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দিলেন-না। বাংলাদেশ কোচ মনে করেন, এই ব্যাপারে আপোষের সুযোগ নেই, ‘খেলায় সবার উপরে থাকবে খেলোয়াড়ি মনোভাব। এখনও ক্রিকেট খেললে আমি সেই খেলোয়াড়ি মনোভাব দেখিয়েই খেলতাম। এর কোনও নড়চড় হতে দিতাম না।’
Walsh
সাতাশির বিশ্বকাপে ইমরান খানের পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শেষ ওভারের শেষ বলে অশ্বিনের মতোই ‘ম্যানকাড’ আউট করার সুযোগ পেয়েছিলেন ওয়ালশ। কিন্তু তিনি সেটা করেননি। শেষ বলে জিততে পাকিস্তানের দরকার ছিল ২ রান। ওভারের চতুর্থ বলে ছক্কা মেরে দিয়েছিলেন আবদুল কাদির। পঞ্চম বলে কাদির এবং সেলিম জাফর আরও ২ রান নেন।
এমন এক মুহূর্তে শেষ বল করার আগে ওয়ালশ দেখলেন, নন-স্ট্রাইকার সেলিম জাফর ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন। তিনি বলটা না করে দাঁড়িয়ে পড়লেন। সেটাই ছিল পাকিস্তানের শেষ উইকেট এবং জাফরকে রান আউট করে দিলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতে যায়। ওয়ালশ তা করতে চাননি। ফিরে যান রান-আপে। শেষ বলটা করেন এবং পাকিস্তান রান নিয়ে জিতে যায়। ওই হারের ফলে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ওঠা আটকে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের।

কিন্তু বত্রিশ বছর পেরিয়ে গেলেও ওই আউট নিয়ে আক্ষেপ নেই ওয়ালশশের। ভারতীয় পত্রিকা আনন্দবাজারের সঙ্গে কথোপকথনে বাংলাদেশের কোচ ওই স্মৃতি নিয়ে বলেন, ‘এখনও এতটুকু আক্ষেপ নেই। বরাবর বিশ্বাস করেছি, অসৎ ভাবে বা অখেলোয়াড়ি মনোভাব দেখিয়ে খেলার মাঠে জয় করা যায় না। এখনও তাই মনে করি।’

No comments

Powered by Blogger.